বাংলাদেশে ফেসবুকের মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানো রোধ করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ফেসবুকের থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট চেকিং প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত হয়েছে এর আন্তর্জাতিক পার্টনার এএফপি ও বাংলাদেশ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্ট ওয়াচ।
২০২০ সালে বাংলাদেশে বুম-এর সাথে প্রথম এই প্রোগ্রামটি শুরু করে ফেসবুক, যার সাথে এখন যুক্ত হলো এএফপি ও ফ্যাক্ট ওয়াচ।
পোয়েন্টার ইনস্টিটিউটের নিরপেক্ষ ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্ট চেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) দ্বারা স্বীকৃত এএফপি ও ফ্যাক্ট ওয়াচ ফেসবুকে বাংলাদেশ থেকে শেয়ার করা বাংলা কিংবা ইংরেজিতে লেখা পোস্ট, ছবি ও ভিডিওর সঠিকতা যাচাই এবং রেটিং করবে।
থার্ড পার্টির ফ্যাক্ট-চেকাররা যদি কোন কনটেন্ট বা স্টোরিকে অসত্য, পরিবর্তিত কিংবা আংশিক অসত্য হিসাবে চিহ্নিত করে তখন তা নিউজফিডে কম প্রদর্শিত হবে। ইনস্টাগ্রামও এ ধরনের স্টোরি এক্সপ্লোর ও হ্যাশট্যাগ পেজগুলোতে ফিল্টার করে দেখাবে এবং তা ফিডের নিচের দিকে থাকবে। যদি কোন পেজ বা ডোমেইন বারবার ভুয়া খবর শেয়ার করে তাহলে তার পোস্ট ডিস্ট্রিবিউশন কমে আসবে এবং তাদের পেইজের মনিটাইজেশন ও বিজ্ঞাপনগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এছাড়াও ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে থাকা যে সকল কনটেন্টকে ভুয়া কিংবা সত্য থেকে কিছুটা পরিবর্তিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয় সেগুলোর উপরে বিশেষ লেবেল দেওয়া হয় যাতে করে এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীরা নিজেরাই ঠিক করতে পারেন তারা কী পড়বেন, বিশ্বাস করবেন এবং শেয়ার করবেন। ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত অসত্য ও বানোয়াট ছবি, ভিডিও এবং স্টোরির উপরের অংশে এই লেবেলটি প্রদর্শিত হয়। এছাড়া ফ্যাক্ট-চেকাররা কী যাচাই করেছে তার লিঙ্ক-ও দেয়া থাকে।
ফেসবুকের গ্লোবাল ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রাম ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়। বর্তমানে এই তথ্য যাচাই প্রক্রিয়ায় ৮০’র অধিক পার্টনার ৬০টির অধিক ভাষায় কনটেন্টের ফ্যাক্ট চেক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ফেসবুক এশিয়া প্যাসিফিক-এর নিউজ পার্টনারশিপের পরিচালক অঞ্জলি কাপুর বলেন, “ভুয়া খবর শেয়ার করা প্রতিরোধে ফেসবুকের চলমান প্রচেষ্টার একটি অংশ হিসেবে এএফপি এবং ফ্যাক্ট ওয়াচ-এর সাথে এই পার্টনারশিপ। আর এতে আমাদের প্রয়োজন সবার সহায়তা। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, আইএফসিএন এবং আমাদের ফ্যাক্ট-চেকিং পার্টনাররা এ উপলক্ষ্যে আজ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করছেন। তারা মহামারির সময়ে তথ্য যাচাইকরণের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করবেন। সবার সম্মিলিত এই উদ্যোগটিকে আমরা স্বাগত জানাই। বাংলাদেশে তথ্য সচেতন সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।”
২০২০ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠনের সাথে ফেসবুক “উই থিঙ্ক ডিজিটাল” প্রোগ্রাম শুরু করে। ফেসবুকের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রামটি অনলাইনে পরবর্তী প্রজন্মের ডিজিটাল নাগরিকদের আরও সচেতন এবং দায়িত্বশীল করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। গত সপ্তাহে ফেসবুক জার্নালিজম প্রোজেক্ট এবং রয়টার্স মিলিতভাবে বাংলাদেশে রয়টার্স ডিজিটাল জার্নালিজম কোর্স চালু করেছে যা সাংবাদিকদের ডিজিটাল প্রতিবেদন এবং সম্পাদনায় সাহায্য করবে।
কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন এবং ভ্যাকসিন সম্পর্কে তথ্য পেতে দেশের জনগণকে সহায়তা করার লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি বিভাগের সাথে কাজ করছে ফেসবুক। এছাড়া কোভিড সংক্রান্ত ভুল তথ্য প্রচার রোধ করতে এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এপ্রিলে বাংলাদেশে একটি মিডিয়া লিটারেসি ক্যাম্পেইনও শুরু করে।
নিউজঃ চ্যানেল-আই